তারুণ্যের ফটোগ্রাফি

তারুণ্যের ফটোগ্রাফি

কেউ করেন শখে, কারওবা পেশা। কিন্তু তারুণ্যের হাতে হাতে এখন একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ছাড়া যেন ঘোরাঘুরি-মাস্তি-আড্ডা জমে ওঠে না। সেসব আনন্দঘন মুহূর্ত ও গল্পগুলোকে ফ্রেমে বেঁধে রাখতে কে না পছন্দ করেন। আসলে ছবি শুধু ছবি নয়, এক একটি গল্প। ছবি তোলাটা নেশা কিংবা পেশা যাই হোক না কেন স্মৃতিটুকু আগলে রাখতে জুড়ি নেই। এক সময় ফটোগ্রাফার কিংবা ক্যামেরাম্যান ছবি তুলে দিতেন। এখন অনেক ছেলেমেয়েই শখের বশে ক্যামেরা হাতে তুলে নেন। অনেকে আবার শখের পাশাপাশি ফ্রিলান্সার হিসেবেও ফটোগ্রাফি করেন। বর্তমানে এর জনপ্রিয়তাও ব্যাপক।

 

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অপূর্ব অপু। পড়াশোনা গণ্ডি এখনো পেরোননি। কিন্তু ডিএসএলআর হাতে ঘুরে বেড়ান শহর-বন্দরে। শখের বশেই তুলে আনেন প্রকৃতির অপূর্ব সব ছবি। বলেন, ‘শখের বশে হলেও মাঝে মাঝে ফ্রিলান্সিংও করি। ইচ্ছা রয়েছে ফটোগ্রাফিকেই পেশা হিসেবে নেওয়ার। তবে, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না নিয়ে ইন্টারনেট থেকেই শিখেছিলাম।’

 

তরুণ ফটোগ্রাফাররা শিক্ষানবিস পর্যায়ে ফটোগ্রাফি করে মাসিক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফারদের উপার্জনও বাড়ে। আর ফ্রিল্যান্সার ও ওয়েডিং ফটোগ্রাফার হিসেবেও তরুণ ফটোগ্রাফার মাসে সম্মানজনক অর্থ আয় করছে। ফটোগ্রাফিতে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে অবশ্যই ভালো মানের ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে। বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয় দুটি ক্যামেরা আছে তা হলো ক্যানন ও নাইকন। এগুলো টেকসইও বটে। ছোট বা বড়, ক্যামেরার দাম নির্ভর করে ক্যামেরার ক্যাটাগরির ওপর। ৪০ হাজার থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামের ক্যামেরা রয়েছে বাজারে। বাজার ঘুরে বেছে নিতে পারেন ক্যাননের ইক্সাস ২৬৫এইচ থ্রি, ইওস ৭০০ডি, ইওস ১১০০উ, নিকন কুলপিক্স এ, এস৯৭০০, কুলপিক্স এস৯৬০০, উ৫০০১, উ৫০০০, উ৭০০ ইত্যাদির মডেল।

 

ছবি তোলার পাশাপাশি লক্ষ রাখা উচিত যে, শখের ক্যামেরার ঠিকঠাক যত্ন হচ্ছে কি না। ডিজিটাল এসএলআর (সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্ট) ক্যামেরার যত্নটা একটু বেশি লাগে। এ ধরনের ক্যামেরার বড় শত্রু পানি। বৃষ্টিতে ভিজে বা পানিতে ডুবে ক্যামেরা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। পানি ঢোকামাত্র শুকনো কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে মোছা উচিত এবং কিছুটা সময় রোদে দেওয়া উচিত। তাহলে ক্যামেরা ভালো থাকবে। আবার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশেও ক্যামেরা ও লেন্সের ভিতরে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস পড়তে পারে। ফাঙ্গাস বেশি পড়লে ছবিতে আলো-ছায়া ও সঠিক রং পাওয়া যায় না। লেন্সে ছত্রাক পড়ে গেলে সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে যান। আর ক্যামেরার আশপাশে এমন কোনো জিনিস রাখা যাবে না, যাতে ক্যামেরায় দাগ পড়ে। ধুলাবালিযুক্ত জায়গায় লেন্স পরিবর্তন করলে ক্যামেরার সেন্সরে ময়লা জমে। অন্তত ৪ মাস পর পর সেন্সর পরিষ্কার করা উচিত। লেন্সের সামনে সার্বক্ষণিক ইউভি (অতি বেগুনি রশ্মি) বা এসএল (স্কাইলাইট) ফিল্টার লাগিয়ে রাখা ভালো। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ক্যামেরা রাখলে ভিউ ফাইন্ডার দিয়ে কিছু দেখা যায় না, ঝাপসা লাগে। সহজে ফোকাস হতে চায় না। তাই স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ক্যামেরা রাখা উচিত। এ ছাড়াও ক্যামেরা নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত। এ জন্য লেন্স ক্লিনার বা সিলিকা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। নিয়মিত ব্যাটারি চার্জ করতে হবে। দিনের কিছুটা সময় শখের ক্যামেরায় দিতে পারলেই ক্যামেরা থাকবে ভালো।

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন

ছবিঃ সংগৃহীত